ভারত সরকার অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্য ই-শ্রম কার্ড (E-Shram Card) চালু করেছে, যার মাধ্যমে শ্রমিকরা নানাবিধ সুবিধা পাবেন। এই কার্ডধারীদের জন্য মাসে ১০০০ টাকা পেনশন, দুর্ঘটনা বীমা, বাড়ি নির্মাণ সহায়তা এবং আরও অনেক সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।
এই ব্লগে আমরা ই-শ্রম কার্ড কী, এর সুবিধাগুলো, আবেদনের যোগ্যতা, প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস এবং অনলাইনে আবেদনের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া বিশদভাবে আলোচনা করব।
ই-শ্রম কার্ড কী? (What is E-Shram Card?)
ই-শ্রম কার্ড হল কেন্দ্রীয় সরকারের একটি বিশেষ উদ্যোগ, যা অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের (যেমন—রিকশাচালক, কৃষি শ্রমিক, নির্মাণ শ্রমিক, গৃহকর্মী, ছোট দোকানদার ইত্যাদি) সামাজিক সুরক্ষা দিতে চালু করা হয়েছে।
ই-শ্রম কার্ডের উদ্দেশ্য:
- অসংগঠিত শ্রমিকদের একটি ডাটাবেস তৈরি করা।
- সরকারি সুবিধা (পেনশন, বীমা, শিক্ষা সহায়তা) সরাসরি তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া।
- শ্রমিকদের আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
ই-শ্রম কার্ডের সুবিধা (E-Shram Card Benefits)
১. মাসিক পেনশন (৩০০০ টাকা)
- ৬০ বছর বয়সের পর প্রতি মাসে ১০০০ টাকা পেনশন পাবেন (প্রধানমন্ত্রী শ্রম যোগী মানধন যোজনার অধীনে)।
- এই সুবিধা পেতে ই-শ্রম কার্ড থাকা বাধ্যতামূলক।
২. দুর্ঘটনা বীমা (২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত)
- কার্ডধারী শ্রমিকের মৃত্যু হলে পরিবার পাবে ২ লক্ষ টাকা।
- স্থায়ী পঙ্গুত্ব হলে ১ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ।
৩. বাড়ি নির্মাণে সাহায্য
- PM Awas Yojana-এর আওতায় বাড়ি তৈরির জন্য আর্থিক সহায়তা।
৪. শিক্ষা সহায়তা
- শ্রমিকের সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি ও ফি মওকুফের সুবিধা।
৫. গর্ভবতী মহিলাদের জন্য সহায়তা
- মাতৃত্বকালীন ভাতা (প্রধানমন্ত্রী মাতৃ বন্দনা যোজনার আওতায়)।
কে আবেদন করতে পারবেন? (Eligibility Criteria)
- বয়স: ১৬ – ৫৯ বছর।
- মাসিক আয়: ১৫,০০০ টাকার কম।
- যারা আবেদন করতে পারবেন না:
- আয়করদাতা (Income Tax Payers)।
- EPFO/ESIC সদস্য।
- সংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মী (সরকারি/প্রাইভেট চাকরিজীবী)।
প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস (Required Documents)
- আধার কার্ড (মোবাইল নম্বর লিঙ্ক থাকতে হবে)।
- ব্যাংক অ্যাকাউন্ট (IFSC কোড সহ)।
- প্যান কার্ড (যদি থাকে)।
- মোবাইল নম্বর (আধার-লিঙ্কড)।
- পাসপোর্ট সাইজ ফটো।
- রক্তের গ্রুপ (ঐচ্ছিক)।
ই-শ্রম কার্ডের জন্য অনলাইনে আবেদন করুন (Step-by-Step Guide)
ধাপ ১: অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান
- https://eshram.gov.in ভিজিট করুন।
ধাপ ২: রেজিস্ট্রেশন করুন
- “Register on eShram” অপশনে ক্লিক করুন।
- আপনার আধার-লিঙ্কড মোবাইল নম্বর দিন ও OTP ভেরিফাই করুন।
ধাপ ৩: ফর্ম পূরণ করুন
- ব্যক্তিগত তথ্য (নাম, বয়স, ঠিকানা)।
- পেশা সম্পর্কিত তথ্য (কাজের ধরন, অভিজ্ঞতা)।
- ব্যাংক ডিটেইলস (অ্যাকাউন্ট নম্বর, IFSC কোড)।
ধাপ ৪: সাবমিট করুন
- সব তথ্য চেক করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন।
- ই-শ্রম কার্ড ডাউনলোড করুন (PDF ফরম্যাটে)।
ই-শ্রম কার্ড থেকে পেনশন পেতে কী করবেন?
শুধু ই-শ্রম কার্ড থাকলেই ১০০০ টাকা পেনশন পাওয়া যাবে না। এর জন্য প্রধানমন্ত্রী শ্রম যোগী মানধন যোজনা-তে আলাদাভাবে আবেদন করতে হবে:
- PM-SYM স্কিমের ওয়েবসাইটে রেজিস্টার করুন।
- ই-শ্রম কার্ড নম্বর দিন।
- ৬০ বছর বয়সের পর মাসিক ১০০০ টাকা পাবেন।
সতর্কতা (Important Warnings)
- কোনো এজেন্টকে টাকা দেবেন না! ই-শ্রম কার্ড সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।
- শুধুমাত্র অফিসিয়াল ওয়েবসাইট (https://eshram.gov.in) ব্যবহার করুন।
- জাল ওয়েবসাইট/ফোন কল এড়িয়ে চলুন।
ই-শ্রম কার্ড অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্য একটি যুগান্তকারী প্রকল্প। এই কার্ডের মাধ্যমে পেনশন, বীমা, বাড়ি নির্মাণ সহায়তা—সবকিছুই পাওয়া যাবে। তাই আজই আবেদন করুন এবং সরকারের এই সুবিধার অংশীদার হোন!
দ্রুত আবেদন করুন, সুযোগ সীমিত!
অফিসিয়াল লিঙ্ক: https://eshram.gov.in
(বিঃদ্রঃ – এই ব্লগটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য। সরকারি বিজ্ঞপ্তি ও নিয়মাবলী চেক করুন।)